খুবই উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক সে। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি হবে। এখন বিকেল চারটে। অফিসে কাজের খুব চাপ। কিন্তু মনটা আজ বড় উত্তেজিত। অনেকদিন বাদে কলেজের এক পুরনো বন্ধুর সাথে দেখা হবে। ঠিক করেছে ছোটোবেলার মতো পেট পুরে চিকেন ভরতা আর রুমালি রুটি খাবে । তারপর দু কাপ চা আর আড্ডা।
বেজে গেল সাড়ে পাঁচটা। নাঃ এবার বেরোতেই হয়। নিজের হাতের কাজটা অবশ্য শেষ করে ফেলেছে সে। কিন্তু বাকিরা সবাই এখনও করে চলেছে কাজ। আসলে কাল একটা উচ্চপরযায়ের বৈঠক আছে তারই প্রস্তুতি।
হন্তদন্ত হয়ে সে হাজির হয়ে গেল আলিয়া হোটেলের সামনে। হ্যাঁ, এখানেই বন্ধুর থাকার কথা। পাওয়াও গেল। সব প্ল্যান মতোই চলতে লাগলো। সে ডুবে গেল তিরিশ বছরের আগের জীবনে। ছেলে কলেজে উঠে গেল বুঝলি কিন্তু সেই মেয়ে,বৌ,বুড়ি যা খুশী দেখার অভ্যাস্টা পাল্টালো না মাইরি। বলে সলজ্জ একটা দৃষ্টি আর দুষ্টু দুষ্টু হাসি। বন্ধুরো এটা খুবি চেনা দৃষ্টি, চেনা হাসি। বল্ল ছেড়ে দে, নাই বা পাল্টালো, এটাই তুই।
প্রায় সাড়ে সাতটা এখন। দু তিনটে ফোন এলো গেলো। একটু যেন ছটফটানি। স্বাভাবিক, বাড়ি তো বেশ দুর। বললাম তাহলে এখন এগোবি। প্রায় লুফে নিলো সে। বিদায় দিয়ে কেন যেন ফলো করলাম এক পা দু পা করে। দেখি সে চলেছে তার অফিসের গেটের দিকে। অন্ধকার সিড়ি দিয়ে ঘাড়ের ঘাম মুছতে মুছতে ১৩০/৯০ বিপির মানুষটি কাঁধের ব্যাগটা টানতে টানতে এক পা দু পা করে উঠে চলেছে। লিফট তো বন্ধ। পাঁচ তলা পৌছানো কি মুখের কথা? তবু সে ..........
অবিশ্বাস্য হলেও এ একেবারে সত্যি ঘটনা। এই 'সে' আমাদের পরম শ্রদ্ধেও সুজয় সেন।
ore shala....lekhar haath-ta ekhono dekhchhi sei aager motoi aachhe....santanu golpo bolle kalpona-bastob sab ek hoye jayy....jakhan bhabchhi eta dhop,takhan bujhiye debe eta jeeban theke neoya (jodio seta hoyto dhop-i!!!)abar kono khub gopon kichhu satyi katha bole seta ke abar dhop bole chaliye debe situation-ta ke manage deoyar jonye....this is the characteristic Santanu!Ekhono paaltaayni....ghatana jeta bolechhe seta oto khani romanchokar hoyyto noyy,tobe jeeban theke neoya nishchoi!Ke ki korchhe,keu bhalo bujhchhe na,amio bujhchhi na...tobe besh ekta 'Gelo','Gelo' rab porechhe....sabar bhalo hok....
ReplyDeleteআরে!এটাই'ত সেই লোকটা (থুড়ি,ছেলেটা)।
ReplyDeleteমাথায় চুলের অনটন।বর্ষায় হাতে ছাতা,গরমে হাতে থাকা দাঁতেকাটতে থাকা রুমাল। যে একমুহুর্তে ঘাসে নামতে পারে,হনহনিয়ে উঠতে পারে,উচুঁতলার উচ্চাসনে।লিফ্ ট ছাড়া।ধমনীতে রূপালীজয়ন্তী-প্রাচীন উচ্চচাপ নিয়ে।
Thanks শান্তনু প্রায় নিখুঁত ছবিটা তুলে ধরার জন্য।
সেনসাহেবের কথা উঠতে আর দু'একটা কথা মনে প'ড়ে গেল:
ReplyDelete১) আনেক চেষ্টা করেও যখন মুখের রং টা হাতের তেলোর মত হচ্ছে না, দেবাশিস একটু শ্লেষাত্মক ভংগিতে সাহেবকে সেটা মনে করিয়ে দিচ্ছিল। সেনসাহেবের বেদনাজর্জর স্বীকারোক্তি: 'পার্টনার, মুখটাই তো পোঁ_টা মেরেছে।' বার্টান্ড রাসেলও বোধহয় এরকম ফিলসোফিকাল quote দিতে পারতেন না।
২) Nothing - I repeat, nothing - will ever beat 'তোরা কি কেউ একটু জল দিবি?' রিরংসার ঘেরাটোপ থেকে সদ্য বেরিয়ে আসা একজন শ্রান্ত কিন্তু সুখাপ্লুত পুরুষ ঠিক এই কথাটাই বলতে চায়।
৩) বিবেকানন্দ কলেজে ফর্ম ভরতে গিয়ে সাহেবের কাছে ৫ টাকা ধার নিয়েছিলাম, ফেরানো হয় নি। আওয়াজ দেয় ঠিকই, কিনতু ফেরত্ কিছুতেই নেয় নি। আমার শেষদিন পর্যন্ত ঋণী থেকে যাব।
শান্তনুকে অভিনন্দন, এরকমটা একটা ছোটগল্প লেখার জন্য; দাড়িবুড়োর ভাষায়, 'শেষ হইয়াও হইল না শেষ!'।
তোরা তো কেউ প্রশ্ন করলি না - রাত সাড়ে সাতটায় সে অফিসমুখো কেনো? উচ্চপর্যায় বৈঠক?
ReplyDeleteআমি কিন্তু ক্লু দিয়েছিলাম - দু চারটে ফোন এলো গেলো......
যাক সেনকে কেউ শ্যেন দ্রিষ্টিতে দেখে নি।
Good Luck! সেনসাব রহস্য উন্মোমোচন আর করলাম না। তুমি ভালো থেকো। খুশী থেকো। তোমার ইমেজ পালটে গেছে।
আরে!গাণ_ ,এতো মুখরোচক কাহিনী দেখছি!
ReplyDeleteদিদি পদ সামলানোর পর ভেবেছিলাম,এইব্যাপারটায় অন্তত সেনসাহেবের পো_টা মারা যাবে।মানে,মা_(বুড়ি/বিধবা পড়)বাজিটা একটু কমাতে হবে। আশ্বস্ত হয়েছিলাম। এইভেবে যে, আনন্দবাজারে "বিধবা ফুসলানোর দায়ে উচ্চপদস্থ আধিকারিক..." এইধরনের headlinesটা আর দেখতে হবে না...
শালা,নর(ী)রক্তের স্বাদ পাওয়া বাঘ...
নারীর রক্ত না ওই- কি বলে, ইয়ের - স্বাদ পাওয়া বাঘ!
ReplyDeleteসেনসাহেবকে শ্যেনদৃষ্টিতে দেখা....ভাষার খেলাটা ভাল দেখালি তো গুরু!